বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

অতিবৃষ্টির কারণে চুয়াডাঙ্গার কৃষকের পাকা বোরো ধান পানির নিচে

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
বোরোর বাম্পার ফলনে চুয়াডাঙ্গায় কৃষকদের মনে যে খুশির ঝিলিক দেখা দিয়েছিল। গত ৩মে থেকে ১১মে নিম্নচাপের অতি বৃষ্টিতে তা ফিকে হয়ে গেছে। ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়ার পাশাপাশি কেটে রাখা ধান পানিতে ডুবে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের কালাচাঁদ মিয়া বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম, বাম্পার ফলনে খুশিও হয়েছিলাম। বৈরী আবহাওয়া অতিবৃষ্টির ভয়ে আগাম ধান কাটাও হয়েছিল। কিন্তু ধান কাটার পর ঈদের দিন সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টির পানিতে তা তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ জমি থেকে পানি অপসারণ এর কোন ব্যবস্থা নেই। কিছু জমি থেকে পানি বের করে ধানগুলো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রমিক দরকার হলেও পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকের দাম দ্বিগুণ দেওয়ার পরেও মিলছেনা শ্রমিক। প্রায় একই কথা বললেন, কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের রিপন বিশ্বাস ও বুইচিতলা গ্রামের আজাদ মিয়া।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান,৩মে ঈদুল ফিতরের দিন সকাল থেকে জেলায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক হরিবুলা সরকার জানান, অসময়ের বৃষ্টির কারণে কৃষকেরা অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অতীতে জ্যৈষ্ঠ মাসে এ রকম বৃষ্টি দেখা যায়নি। তিনি বলেন, দুর্যোগের আশঙ্কায় কৃষকদের ৮০ শতাংশ ধান পাকার পর বিচালির আশায় না থেকে কাটার পরামর্শ দিলেও বিচালির আশায় অনেকেই তা কাটেননি। তবে ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ জমির ধান কৃষকেরা ঘরে তুলেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে খোঁজ নিচ্ছেন।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠের ধান পানিতে ডুবে আছে। কৃষকদের কেউ কেউ কোমরসমান পানিতে দাঁড়িয়ে ভেসে থাকা কাটা ধান সংগ্রহ করছেন। আবার কেউ কেউ পানিতে তলিয়ে থাকা ধানগাছ কাটতে ব্যস্ত। কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৩০৬ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৩৭ হাজার ২৩০ হেক্টরে। আবাদ কম হলেও ফলন হয়েছে বাম্পার।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: