শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

কাশ্মীরে থাকতে চাচ্ছেন না হিন্দু পণ্ডিতরা, কিন্তু কেন?

ব্যাংকে ঢুকে গুলি করে ম্যানেজারকে মারার ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে বিহার থেকে আসা এক অভিবাসী শ্রমিক খুন হলেন। জোড়া খুনের এই ঘটনার পর হিন্দু পণ্ডিতরা কাশ্মীরে থাকতে চাচ্ছেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার কুলগামের ইডিবি ব্যাংকে ঢুকে ম্যানেজারকে মারা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বিজয় বেনিওয়ালকে (২৯) মৃত ঘোষণা করেন।

ইডিবি স্টেট গ্রামীণ শাখা। বিজয়কে মারার ঘটনা ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে। ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন কাশ্মীরের দু’সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি।

চার দিন আগে রাজস্থান থেকে কাশ্মীরের ব্যাংকে ম্যানেজার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বিজয় বেনিওয়াল। তারপর অভিবাসী শ্রমিক খুন। তার ঠিক দু’‌দিন আগে স্কুলের সামনে হত্যা করা হয় হিন্দু শিক্ষিকাকে। পর পর কাশ্মীরে সংখ্যালঘুদের খুন নিয়ে আতঙ্কে পণ্ডিতরা। হতাশ কেন্দ্রের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে। বেশিরভাগই ছাড়তে চায় কাশ্মীর।

ব্যাংকের দ্বিতীয় ঘটনা মধ্য কাশ্মীরের বদগামের। সেখানকার চাদুরার মাগরায়পুরায় দুই ইটভাটার শ্রমিককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। দুই অভিবাসী শ্রমিককেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মারা যান একজন। তার নাম দিলখুশ কুমার। বিহারের আর্নিয়া থেকে কাজ করতে এসেছিলেন তিনি।
অন্যজন কোনোমতে বাঁচেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। রাজন পাঞ্জাব থেকে আসেন কাজ করতে। রাজনের হাতে গুলি লাগায় প্রাণ রক্ষা পায়। মঙ্গলবার স্কুলের সামনে খুন করা হয় ৩৬ বছরের রজনী বালাকে। গোপালপোরার ঘটনা।

এই সবের জন্য কেন্দ্রের ব্যর্থতা‌র দিকে আঙুল তুলছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। এই নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় তারা হতাশ। বদগামের শেখপোরা ও পুলওয়ামার হালে মূলত পণ্ডিতদের পুনর্বাসন শিবির রয়েছে। ওই সব শিবিরে এখন আতঙ্কের ছায়া।
এখানে শতকরা 95 জন মুসলিম সম্প্রদায় বসবাস করে। তাদের নিজস্ব জমি-জায়গা, ঘরবাড়ি আছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে কিছু উগ্র হিন্দু সম্প্রদায় জোর পূর্বক এখানে বসতি স্থাপন করার চেষ্টা করছে। তাই উগ্র হিন্দ্র সম্প্রদায় মনে করছে শক্তিশালী মুসলিম কাশ্মিরদেরকে ভয়ভীতি দেখিযে কোন লাভ হবে না। সময় থাকতে কাশ্মির ত্যাগ করাই ভাল হবে।

অনেকে ভাবছেন, ‌কাশ্মীরে আর নয়‌। অন্য কোনো রাজ্যে থিতু হতে চাইছে তারা। ৪০ বছরের অমিত কৌল ইতোমধ্যে পাঁচ সহকর্মীর সাথে শেখপোরা ক্যাম্প ছেড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী পুনর্বাসন যোজনায় পাওয়া সরকারি চাকরিতে তিনি জম্মুতে বদলি চান। শেখপোরা ক্যাম্পে পণ্ডিত উদ্বাস্তুরা হতাশ হয়ে প্রতিবাদ শেষে করেন। এখনো টিকে আছে ৪৫টি পরিবার। তারাও ছাড়তে চায় শিবির।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: