মঙ্গলবার, মে ৩০, ২০২৩

আগামীকাল সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকান পাট বন্ধ

ন্যাশনাল ডেস্ক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে আগামীকাল সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণিবিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে পচনশীল পণ্য, ওষুধ, খাবারের দোকানসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা হয়-এমন দোকানের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত শিথিলযোগ্য। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

রোববার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ‌’বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬’ এর ১৪৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ইস্যুতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমিন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তার হোসেন।

সবিচালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাশে দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, সোমবার থেকেই আমরা সরকারের নির্দেশনা কার্যকর করবো। তবে যেহেতু করোনার কারণে গত দুই বছর ব্যবসা মন্দা ছিল তাই শ্রম মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত এই নির্দেশনা স্থগিত রাখতে। শ্রম মন্ত্রণালয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের প্রয়োজনীয় পদপেক্ষ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনার আলোকে বৈঠকে বসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান মতে, রাত ৮টার পর সারাদেশের দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার বন্ধের যে নির্দেশ দিয়েছে সরকার তা সোমবার থেকে কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যে এ নির্দেশনা দেশের সব উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার।

গত ১০ জুন ঢাকা দণি সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপসও রাত ৮টার পর থেকে ঢাকা শহর বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিলেন।

দোকান, বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন বন্ধ রাখতে হবে:

রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ রাখা ছাড়াও প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

যেসব ক্ষেত্রে নির্দেশনা শিথিল থাকবে

নির্দেশনা দেওয়ার পরে শ্রম মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর একটি ধারা গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতা রাখা হয়েছে। যেমন- ডাক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমানবন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস, তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধজাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি, ফুল বিক্রির দোকান, ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান,দাফন ও অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্নের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান খোলা রাখা যাবে।

এছাড়া তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান, হালকা নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটরগাড়ির সার্ভিস স্টেশন, সেলুন, এবং কসমেটিকসের দোকান, ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং সেসব শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যেগুলো বিদ্যুৎ, আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে সেসব প্রতিষ্ঠান এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। কাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটারও এই নিশেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

 

সূত্র : সমকাল



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: