জামালপুরে জেগে উঠা চরে চলছে বালি-খোরদের তান্ডবলীলা
জামালপুরে জেগে উঠা চরে চলছে বালি-খোরদের তান্ডবলীলা

ফিরোজ শাহ,জামালপুর
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার উলিয়া ঘাট এলাকায় যমুনা নদীর বাম তীরে জেগে উঠা চর থেকে, দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন অন্তত শ’খানেক বালুবাহী টাক্ট্রর দিয়ে জেগে উঠা চর থেকে বালু পরিবহণ করা হচ্ছে।
বালু ব্যবসায়ীদের দাবি উপরের মহলে ম্যানেজ করেই আমরা বালু উত্তোলন করছি। আর উপজেলা প্রশাসন বলছেন বালু ব্যবসায়ীরা মনগড়া ভাবে মন্তব্য করছেন। অতি শীঘ্রই বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তানভীর হাসান রুমান।
জানা গেছে, উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া এলাকার শাহাদত হোসেন দুলাল ও রুহুল আমিন উলিয়া ঘাটের রাজনগর নামক স্থানে জেগে উঠা যমুনা নদী থেকে দীর্ঘ দিন যাবৎ অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করে আসছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও উপজেলা প্রশাসন রহস্য জনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
সোমবার (১৫মে) দুপুরে উলিয়া ঘাটের গ্রামীণ ব্যাংকের পশ্চিম পাশে রাজনগর নামক স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দক্ষিণ পাশ থেকে শাহাদত হোসেন দুলালের ১০জন, দিন হাজিরার শ্রমিক বালু খননের বেলচা দিয়ে ২টি টাক্ট্রর গাড়ি বোঝাই ও অপর পাশে ভেকুপ মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়েও বালু উত্তোলন করে বিক্রি এবং ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু জমিয়ে রাখছেন। একই স্থানে রুহুল আমিনের শ্রমিক ভেকুপ মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে বালুবাহী গাড়ি বোঝায় করে দিচ্ছেন।
এছাড়াও ওই এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে ৬টি বালুর ঘাট তৈরি করে টাক্ট্রারে বালুমাটি উত্তোলন করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন তারা।
এই বালু উত্তোলনের মাধ্যমে বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে, আর অন্যদিকে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ছে।
উলিয়া ঘাট এলাকার মিনহাজ মিয়া জানান, বালু ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করতে পারি না। এরা দিন-রাতে কাঁকড়া ও বালুবাহী গাড়ি দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি বলেন, কয়েকবার উপজেলার লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হয় না। আর আপনারা লিখে কি করবেন। কোন কিছুই হবে না। বরং আমাদেরই ক্ষতি হবে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা ডুকিয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
বালু ব্যবসায়ী সাবেক সেনা সদস্য শাহাদত হোসেন দুলাল,স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর রাগান্বিত হয়ে বলেন,
আপনারা এই কয়জন সাংবাদিক দিয়ে কি হবে পুরো জেলার সাংবাদিকরা এসে লিখেন। লিখে কি করতে পারবেন করেন। আমরা উপরে মহলকে ম্যানেজ করেই বালু তুলছি।
তবে আরেক বালু ব্যবসায়ী রুহুল আমিন নিউজ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভাই নিউজ করে কি হবে। সবাইকে দিয়েই বালুর ব্যবসা করছি। আপনারা আসছেন আমি যা পারি তাই দিবো। তার পরেও নিউজ করিয়েন না।
ইসলামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, বালু ব্যবসায়ীরা মনগড়া ভাবে মন্তব্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,আপনারা এলাকাবাসীর নিকট থেকে লিখিত অভিযোগ
নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তানভীর হাসান রুমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
Comments are Closed