মঙ্গলবার, মার্চ ১৯, ২০২৪

গিনেস বুকে বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরুর স্থান পেলো চারু!

বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরু হিসেবে গিনেস বুকে জায়গা করে নিয়েছে চারু নামের আরেকটি গরু। রানির মতো সাভারের শেকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি খামারেই বেড়ে উঠেছে চারুও। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রানী মারা গেছে কিছুদিন আগে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) গিনেস কর্তৃপক্ষ চারুকে বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির জীবিত গরুর স্বীকৃতি দিয়ে ই-মেইল পাঠায়। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চারুকে খর্বাকৃতির গরুর স্বীকৃতি দিতে খামরটির পক্ষ থেকে গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়।

সাভারে আশুলিয়ার চারিগ্রাম এলাকায় শেকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সুফিয়ান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

খামার কতৃপক্ষ জানিয়েছে, চারু নামের গরুটির জন্ম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। গরুটির বয়স এখন আড়াই বছর। উচ্চতা ২৩ দশমিক ৫০ ইঞ্চি, লম্বায় ২৭ ইঞ্চি ও ওজন ৩৯ কেজি। ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর গিনেস বুকে মৃত গরু হিসেবে রেকর্ড গড়া রাণীর উচ্চতা ছিলো ২০ ইঞ্চি, লম্বা ২৪ ইঞ্চি ও ওজন ২৬ কেজি।

চারুকে দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা খামারের কর্মচারীরা বলেন, ‘আমাদের শিকড় এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ খামারে অনেক রকমের পশু-পাখি লালনপালন করা হয়। রাণী মারা যাওয়ার পর প্রায় ছয় মাস আগে চারুকে আমরা সিলেট থেকে সংগ্রহ করি। যেভাবে রাণীকে সংগ্রহ করা হয়েছে সেভাবেই চারুকে আনা হয়েছে। এরপর থেকে এই খামারে চারুকে প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশে পালন করছি। আগে যেহেতু রাণী মারা গেছে তাই চারুর প্রতি একটু বেশি যত্ন নেওয়া হয়। স্যাররা এখানে আসার পর ওর নাম চারু দিয়েছে। গিনেস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা একাধিকবার চারুর শরীরের গঠনের (মাপ) ছবি এবং ভিডিও তাদেরকে পাঠিয়েছি।’

কর্মচারীরা আরো বলেন, ‘শেকড় এগ্রোর পশু চিকিসক দুই সপ্তাহ পরপর চারুকে দেখতে আসেন। তিনি চারুর ওজন, শরীর চকচকে আছে কি না, গঠন বাড়ছে কি না এসব দেখেন।’

খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী সুফিয়ান বলেন, ‘অল্প ক’দিনেই মারা যাওয়া রাণী’র উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভক্ত তৈরী হয়েছিল। আর তাই বেশিরভাগ মানুষই রাণীর মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। আমরা অনেক টাকায় বিক্রির অফার পেয়েও কেন বিক্রি করিনি সেটা নিয়ে অনেকে বিদ্রুপ করেছেন। কেউ কেউ আমাদের গাফেলতির কথা বলেছেন। ওই সময়টাতে ভীষণ খারাপ লাগতো। আসলে রাণী’র প্রতি সবার ভালবাসাটা আমরা বুঝতাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাণী’র মৃত্যুর পর গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কতৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে আমাদের ইমেইল পাঠান। তারা জানান, রাণীর সম্মানার্থে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে আরো একটা ক্যাটাগরি তারা চালু করবেন। আমাদের কাছে কম্পিটেশন করার মত কিছু থাকলে এতে অংশগ্রহণ করতে পারি।’

কাজী সুফিয়ান বলেন, ‘নির্ভরশীল কর্মীবাহিনীর সাহায্যে আমাদের সংগ্রহশালায় নতুন চমক যোগ হয় ৪ দাঁতের প্রাপ্তবয়স্ক দেশীয় প্রজাতির বামন গরু চারু। যার উচ্চতা ২৩ দশমিক ৫০ ইঞ্চি। চারু লম্বায় ২৭ ইঞ্চি ও এর ওজন ৩৯ কেজি। যাকে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত খর্বাকৃতির গরু হিসেবে গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কতৃপক্ষ স্বীকৃতি দিয়েছে। মঙ্গলবার গিনেস কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করেছেন।’

চারুকে নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে সুফিয়ান বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে ছিল বিশ্বরেকর্ডধারী রানীকে বাংলাদেশ সরকারকে উপহার হিসেবে দেওয়া। যেন সরকারের তত্ত্বাবধানে রাণী তার জীবনের সর্বোচ্চ সময়টা উপভোগ করতে পারে। কিন্তু রাণী অকালে চলে যাওয়ায় সে সুযোগটা আর আমরা পাইনি। এখন চারু যাতে তার জীবনের সর্বোচ্চ সময়টা উপভোগ করতে পারে এটা আমাদের ইচ্ছা।’



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: