সাতক্ষীরায় মসজিদে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায়ের অভিযোগে কুমিল্লার ফরিদ গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরায় মসজিদে মসজিদে গিয়ে নামাজ শেষে নিজের অসুস্থতার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগে কুমিল্লার ফরিদ উদ্দীন মিয়া নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জাতীয় সেবার নং ৯৯৯ এর মাধ্যমে কল পেয়ে সদর থানা পুলিশ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোডমোড়স্থ বুশরা হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক মোঃ ফরিদ উদ্দীন মিয়া (৫২) কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার বলেশ্বরী গ্রামের মৃত আব্দুল গণি মিয়ার ছেলে।
জানা যায়. মোঃ ফরিদ উদ্দিন মিয়া দিব্যি সুস্থ রয়েছেন, তবুও বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায়ের পর নিজের কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বলে সাহায্য চেয়ে মাসে মোটা টাকা রোজগার করেন। লোকটি গত কয়েকদিন ধরে সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে তার একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে সাহায্যের আবেদন করেন। এমনি ভাবে প্রতারনা করা অভিযোগে সাতক্ষীরা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালকের সহায়তা গ্রেপ্তারের পর পুলিশের তল্লাশিতে তার ব্যাগে পাওয়া গেল লক্ষাধিক টাকা।
সাতক্ষীরা শহরের বুশরা হাসপাতালের পরিচালক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, গত মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল মসজিদে আসরের নামাজ শেষে ঈমাম সাহেবের আহবানকে শ্রদ্ধা রেখে চিকিৎসার জন্য সাহায্য প্রার্থী ফরিদ উদ্দীনকে কিছু টাকা দান করি। মসজিদের অন্যান্য মুসল্লিরাও কম বেশি সাধ্যমত দান করেন। রাতে এশার নামাজে ওই একই ব্যক্তি শহরের আহ্ছানিয়া জামে মসজিদের ঈমাম সাহেবের অনুমতি ছাড়াই নামাজ শেষ হতে হতেই নিজে দাঁড়িয়ে সাহায্যের আবেদন করেন। তাতে মুসল্লীগণ বিরক্ত হলেও তাকে কিছু বলেননি। আমিও বাকি নামাজ শেষে বাইরে এসে ওনাকে প্রশ্ন করি আপনার কি সমস্যা? তিনি জানালেন তার একটা কিডনি নষ্ট। আমি ওনাকে বললাম কালেকশন শেষে আমার হাসপাতালে আসেন আপনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। ওনার পাশে আমার হাসপাতালে একজন ওয়ার্ড বয়কে দাঁড়িয়ে দেই। কিছুক্ষণ পরে ওনাকে হাসপাতালে আনলে আমি আমার প্যাথলজি ল্যাবে পাঠাই।
এসময় তিনি সুস্থ আছেন বলে টেস্ট করতে অসম্মতি জানান এবং আমাকে গালমন্দ করতে থাকেন। তাকে পুলিশে দিতে চাইলে তিনি চরম উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এঘটনায় আমার সন্দেহ আরো ঘণীভূত হয়। অবশেষে জাতীয় সেবার ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে রাতেই তাকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করি। পুলিশ এসময় তার ব্যাগ চেক করে ১ লক্ষের বেশি কিছু টাকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির জানান, লোকটি যা করেছে সেটা অন্যায়। এমনভাবে প্রতারণা করার জন্য পুলিশের আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের পর বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগাওে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
Comments are Closed