শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

হাইকোর্টে জামিন শুনানিতে যা বললেন পরীমনির আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মাদক মামলায় নিম্ন আদালতের আদেশের বিষয়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে রিভিশন আবেদন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হলে পরীমনির আইনজীবী মামলার বিবরণী ও জামিনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তবে আদালত জব্দ করা আলামত এবং ঘটনার তারিখ, সময় ও এজাহার সম্পর্কে জানতে চান।

জবাবে আইনজীবী এসব বিষয় আদালতে উপস্থাপন করে শুনানি করেন। মামলার অভিযোগ (এফআইআর) থেকে তথ্য তুলে ধরেন আইনজীবী।

শুনানিতে আইনজীবী বলেন, এর আগে ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এসময় পরীমনির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। পরে ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা দায়ের করে।

এরপর হাইকোর্টে করা আবেদনের বিষয়ে জানতে চান সর্বোচ্চ আদালত। জবাবে আইনজীবী বলেন, আমরা জামিন চাই এবং নিম্ন আদালতের আদেশ অবৈধ ঘোষণা চাই। কারণ তারা আমার জামিন আবেদন দীর্ঘায়িত করেছেন।

এরপর আইনজীবী জেড আই খান পান্না আবেদনের পক্ষে শুনানির চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, পরীমনিকে গ্রেপ্তারের ২৬ ঘণ্টা পর মামলা হয়েছে। জামিনের বিষয়ে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের আদেশও প্রতিপালন করা হয়নি।

তখন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান বলেন, যে আদেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে তার যৌক্তিকতা নেই। নিম্ন আদালতে বিচারিক ক্ষমতা রয়েছে জামিনের আদেশ নির্ধারণের। এছাড়া তারিখ নির্ধারণ থাকায় হাইকোর্টে এ আবেদন শুনানির যৌক্তিক হবে না।

এরপর আদালত বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনই পুরো আদেশ দেব না। সংক্ষিপ্ত আদেশ দিচ্ছি। পরে আদালত পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলার জামিন আবেদনের ওপর দ্রুত শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

একইসঙ্গে দীর্ঘদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির বিষয়ে দিন নির্ধারণের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, রুলে তাও জানতে চান আদালত। আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলে সেদিন পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে পরীমনির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন জেড আই খান পান্না। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু এহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

গত ২২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরীমনির জামিন আবেদন করা হয়। সে আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এ সময় পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। পরে ৫ আগস্ট র্যাব বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধ মামলা করে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদক সেবন করতেন। এমনকি এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। তিনি বাসায় নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

পরীমনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও পাঁচ-সাতটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। প্রযোজক রাজ তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় সিনেমা জগতে নিয়ে আসেন।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: