শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

কলারোয়ায় এক প্রধান শিক্ষকের হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥ আটক-১

কলারোয়ায় এক প্রধান শিক্ষকের হাত-পা
ভেঙ্গে দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের

বিরুদ্ধে মামলা ॥ আটক-১

কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া প্রতিনিধি ॥ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ২নং জালালাবাদ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান
মাহফুজুর রহমান নিশানসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। একই ইউনিয়নের বাটরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক জাকির হোসেনকে রাতের আধারে রাস্তায় ফেলে মারপিট করে হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ায় আহত জাকির হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া সুলতানা বাদী হয়ে গত বুধবার (১১ মে) ১০ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন- ওই ইউনিয়নের বাটরা গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান (৩০),মৃত আলাউদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে বজলে রহমান (৪৮),মৃত রুহল আমিন বিশ্বাসের ছেলে মোখলেছুর রহমান মুকুল(৪৮),মৃত ইমাদুল বিশ্বাসের ছেলে সেন্টু বিশ্বাস (৪৭) ও মন্টু বিশ্বাস (৪৫), ফজলে বিশ্বাসের চেলে রাসেল বিশ্বাস (২৬), মন্টুর ছেলে জিকো বিশ্বাস (২২), ইমান আলী গাজির ছেলে ডালিম গাজি (৪০), নূর ইসলাম বিশ্বাসের
ছেলে বাবু বিশ্বাস (৩৮), মৃত নূর ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৪৮)। এদের মধ্যে ৩ নং আসামী মোখলেছুর রহমানকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে পুলিশ সাতক্ষীরা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন বলে ওসি নাছিরউদ্দীন মৃধা জানান।

মামলার বিবরণে জানান- উক্ত আসামীরা দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। ইউপি চেয়ারম্যান নিশানের নেতৃত্বে সকল আসামীরা এলাকায়
প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারে না। সম্প্রতি বাটরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিশান ও প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত ৮ মে রাত ৮ টার দিকে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন (৪৯) পার্শ্ববর্তী মাছ

ছেড়ে দেওয়া পুকুর দেখে বাড়ি ফেরার পথে আরিফের বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানের সামনে রাস্তার উপর উঠা মাত্রই পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান নিশানের নেতৃত্বে উক্ত সন্ত্রাসী আসামীরা তাদের হাতে থাকা দ্যা ,লাঠি ও লোহার রড দিয়ে জাকির হোসেনেকে গতিরোধ করে। এরপর নিশানের হুকুম পেয়ে উক্ত আসামীরা জাকির হোসেনকে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে হাত-পা ভাঙ্গাসহ রক্তাক্ত জখম করে এবং তার কাছে থাকা কিছু টাকাও নিয়ে নেয়। পরে তার আত্ম চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে আসলে তারা বীরদর্পে প্রান নাশের হুমকী দিয়ে চলে যায়। ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান জানান, আমার লোকজনের আগে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তারা। পরে আমার লোকজন তাদেরকে মেরেছে। তবে আমি সেখানে ছিলাম না। আমাকে আসামী করা হয়েছে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক।

উল্লেখ্য, ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ইউনিয়নে কাউকে তিনি
মূল্যায়ন করেন না। সরকারী বরাদ্দ বিভিন্ন ভাতার কার্ড ইউপি সদস্যদের দিয়ে তালিকা করেন না। নিজস্ব পোষা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কার্ডের তালিকা করান। সাধারণ জনগণের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় করেছেন অথচ ইউপি সদস্যদের পরিষদ থেকে বেতন দেন না। কয়েকদিন আগে এক ইউপি সদস্য ট্যাক্স আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। অর্থ্যাৎ ইউনিয়ন পরিষদের কোন বিষয় কথা বললেই মারপিট। এছাড়া সম্প্রতি এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে লাঞ্ছিত, ছাত্রলীগের এক নেতাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে দরজা আটকিয়ে মারপিটসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইউপি সদস্যগন, স্থানীয় আ’লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তাই তারা ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার পোষা সন্ত্রাসী লোকজনের হাত থেকে যাতে রক্ষা পায় তার ব্যবস্থা করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, জেলা
প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

কে এম আনিছুর রহমান
কলারোয়া



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: