যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত একপেশে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: সেতুমন্ত্রী
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং এলিট এই বাহিনীর সাত কর্মকর্তার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে অযৌক্তিক এবং এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন লগ্নে যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত দেশের ভেতরে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এ বাহিনীর কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নারায়ণগঞ্জর ঘটনায় এ বাহিনীর অন্তত সাতজন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল। কোনো অভিযোগ থাকলে বাহিনী নিজে কিংবা মন্ত্রণালয় তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢালাওভাবে অভিযোগ এনে একটি বাহিনীর প্রধান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান অযৌক্তিক। মানবাধিকারের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্তই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সিটিতে রাস্তায় নামে, তাদের অন্য দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত এ সিদ্ধান্তের গভীরে বাংলাদেশ বিরোধী কিছু ব্যক্তি বা অপশক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে। আমরা তাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি।’
অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সূচকসমূহে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, খোদ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিকে আমেরিকা সফরে বাধা দেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর প্রেরণ করেছিল জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে খাদ্য সংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল আমেরিকা।
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭৫’র বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে আছে। তবুও বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দিইনি।’
বঙ্গবন্ধুর কোনো কোনো খুনি এখনো আমেরিকায় লুকিয়ে আছে, যুদ্ধাপরাধীরাও সে দেশে পালিয়ে আছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক এবং অভিন্ন ইস্যুসহ বহুপাক্ষিক ইস্যুতে দুই দেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে।
Comments are Closed