শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

ভারতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রীকে হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

বিয়ের দুই বছর পরেও সন্তান না হওয়ায় ডাক্তার দেখানোর কথা বলে গত ১৫ এপ্রিল স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৪) ভারতের গুজরাটে নিয়ে যান স্বামী কামরুল।

সেখানে স্ত্রীকে বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তাঁকে। পরে সেখানেই স্ত্রীর লাশ ফেলে দেশে পালিয়ে আসেন কামরুল। দেশে ফিরে প্রচার করেন, স্ত্রীকে হারিয়ে ফেলেছেন।

তবে দেশে ফেরার পর থেকেই কামরুলের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় গত ১১ মে যশোর কোতোয়ালি থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম। সেই মামলায় রাতেই অভিযুক্ত কামরুলকে গ্রেপ্তার করে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কামরুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলার বানিয়ারগাতী গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে।

সালমা খাতুনের পিতা শহিদুল ইসলাম জানান, দুই বছর আগে তাঁর মেয়ের সঙ্গে কামরুলের বিয়ে হয়। সন্তান না হওয়াতে ডাক্তার দেখানোর নাম করে কামরুল গত ১৫ এপ্রিল সালমাকে ভারতে নিয়ে যায়। রোববার কামরুল ভারত থেকে ফিরে এসে তাঁদের জানায়, সালমাকে হারিয়ে ফেলেছে। পরে সেখানকার পুলিশ সালমার পরিবারকে মোবাইলে জানায় সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে কামরুলের আচরণে সন্দেহ হলে পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস নোটে বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও যশোর ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, গত ১৫ এপ্রিল কামরুল ইসলাম (৩০) তাঁর নিজ স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৪) চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। পরে ৮ মে স্ত্রীকে ছাড়াই কামরুল ইসলাম দেশে ফেরেন।
স্ত্রী সালমা খাতুনের পরিবারের লোকজন কামরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খারাপ আচরণ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ভারতে সালমা খাতুনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পায় পরিবারের লোকজন।

সালমা খাতুনের পিতা শহিদুল ইসলাম বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা রুজু করেন। ঘটনাটির রহস্য উদ্ঘাটন ও ভিকটিম উদ্ধারের দায়িত্ব পায় কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশ।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে ভিকটিম সালমা খাতুনকে ভারতের গুজরাট রাজ্যে নিয়ে বিক্রির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে কামরুল দেশে এসে পালিয়ে আছে।

এরপর বুধবার গভীর রাতে কোতোয়ালি থানাধীন বসুন্দিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম সালমা খাতুনের পাচারকারী স্বামী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রুপন কুমার সরকার বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে কামরুল জানিয়েছেন, সালমা খাতুনকে (২৪) চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আনান্দ্ জেলার ভালেজ থানা এলাকায় আটক রেখে বিক্রির চেষ্টায় ব্যর্থ হন। সেখানে একটি ভাড়া বাসায় নাকে মুখে আঘাত করে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে দেশে পালিয়ে এসেছে।’

ওসি রুপন কুমার সরকার আরও বলেন, ‘নিহতের পিতার দায়ের করা মামলায় কামরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তের তিনটি পাসপোর্ট, নিহত সালমার পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: