শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

সাতক্ষীরার সাবেক দুই ওসি ও এসআই এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃতমামলার তদন্তভার সিআইডিতে

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরা সদর থানা লকআপ থেকে পাঁচ বছর আগে শহরের পারকুকরালির হোমিও চিকিৎসক ডাঃ মোখলেছুর রহমান জনি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত অপহরণ, হত্যা ও লাশ গুমের মামলার তদন্তভার সিআইডি তে ন্যস্ত করা হয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর আগামি ১৪ অক্টোবরের মধ্যে পুলিশের অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগের একজন সহকারি পুলিশ সুপার অথবা তার উর্দ্ধের পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ অগাস্ট অসুস্থ্য বাবার জন্য বাইসাইকেলে ঔষধ কিনতে যায় শহরের পারকুকরালির শেখ আব্দুর রাশেদ এর ছেলে ডা. মোখলেসুর রহমান । এসময় রাত ৯ টার দিকে সাতক্ষীরা সদর থানার এস.আই হিমেল তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লক আপের মধ্যে থাকা জনির সাথে কথা বলেন বাবা ও স্ত্রী জেসমিন নাহার রেশমা। পরপর দুই দিন সাক্ষাৎ এবং তাকে খাবারও দেন তারা। তার মুক্তি প্রসঙ্গে জানতে গেলে ওসি এমদাদ ও এসআই হিমেল রাশেদের কাছে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেন এবং বলেন জনি আল্লাহর দলের সদস্য ও জঙ্গি। পুলিশ তাদের কাছে তার আইডি কার্ডও চায়। শেখ আবদুর রাশেদ মামলায় উল্লেখ করেন যে, পরদিন ৮ অগাস্ট ফের জনির সাথে দেখা করতে থানায় গেলে পুলিশ জানায় সে কোথায় তা আমাদের জানা নেই। বলা হয় আমরা জনিকে গ্রেপ্তার করিনি।

বিষয়টি তিনি তৎকালিন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, জেলা প্রশাসক ও ক্ষমতাসিন দলে নেতাদেরকে জানিয়েও কোন ফল হয়নি। পরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার স্ত্রী জেসমিন নাহার স্বামীর খোঁজ দাবি করেন। এ ঘটনার পর উচ্চ আদালতে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি রীট পিটিশন করা হয়। এরই মধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানায় জিডি করতে গেলে ওসি ফিরোজ মোল্লা তা গ্রহণ করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে হাইকোর্ট সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক দুই ওসি এমদাদ শেখ ও ফিরোজ মোল্লা এবং এস.আই হিমেলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। একই সাথে মামলার বাদীপক্ষকে ফৌজদারি মামলা করার আদেশ দেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গার আইন সহায়তা চেয়ে না পেয়ে বিশিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অ্যাড. সুলতানা কামালের সহায়তায় নিখোঁজ জনি’র বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ এমদাদ হোসেন, ফিরোজ হোসেন মোল­া ও উপপরিদর্শক হিমেলের বিরুদ্ধে জনিকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার নথিতে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিট পিটিশনের আদেশের জাবেদা নকল, রিট পিটিশন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন ও পিবিআই প্রতিবেদনের ছায়ালিপি জমা দেওয়া হয়। পরে আদালতের নির্দেশনা অনযায়ি ওইসব কাগজপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দেওয়ার পর গত ২৯ আগষ্ট মামলার (সিআর-৬৩৬/২১) শুনানী গ্রহণ করা হয়। শুনানী শেষে বিচারক উল্লেখিত আদেশ প্রদান করেন।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: