সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪

সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যার যন্ত্রের অনুমোদন, ১ মিনিটেরও কম সময়ে মৃত্যু!

ব্যথা, যন্ত্রণাবিহীন সহজ মৃত্যু। সময় লাগবে এক মিনিটেরও কম। এমনই এক যন্ত্রের আইনি বৈধতা দিল সুইজারল্যান্ড। কফিন আকৃতির ওই যন্ত্রে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে বেদনাহীন মৃত্যু ডেকে আনা হয়। যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারকো’।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’ এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে। ‘ডক্টর ডেথ’ হিসেবেও পরিচিত ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফিলিপ নিটশে ছিলেন এই যন্ত্রের উদ্ভাবনের নেপথ্যে। কীভাবে কাজ করবে যন্ত্রটি? প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বাইরে থেকে যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ভেতর থেকেও তা চালু করা যাবে।

অর্থাৎ মৃত্যুর প্রত্যাশায় যে ব্যক্তি ওই যন্ত্রের ভিতর ঢুকবেন, তিনি নিজেও যন্ত্রটি চালাতে পারবেন। এখানেই রয়েছে মূল সমস্যা।

মরণেচ্ছু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অচেতন হয়ে পড়েন। পেশিশক্তি ব্যবহার করে কোনও কাজ করার মতো পরিস্থিতি তাঁদের বেশির ভাগের থাকে না। এই যন্ত্রে তারও সমাধান করা গিয়েছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।

‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’-এর দাবি, ওই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুধুমাত্র চোখের পাতার নড়াচাড়া আঁচ করেই যন্ত্র সঙ্কেত গ্রহণ করতে পারবে। এমনই দাবি ব্রিটেনের একটি দৈনিক সংবাদপত্রের।

সংস্থা জানিয়েছে, আপনার যেখানে প্রয়োজন সেখানেই নিয়ে যাওয়া যাবে সারকোকে। মূল মেশিন থেকে সারকোকে আলাদা করলে তা দেখতে হবে অনেকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে এক বার শুয়ে পড়লেই সব শেষ!

বিশেষ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা প্রদান করা আইনি ভাবে বৈধ। সূত্রের খবর, গত বছর অন্তত ১,৩০০ মানুষ এই প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়েছেন। সংস্থার দাবি, এ বার আইনি বৈধতা পেল আত্মহত্যা করার যন্ত্র ‘সারকো’।

‘ডক্টর ডেথ’ হিসেবে খ্যাত চিকিৎসক ফিলিপ নিটশে বলছেন, ‘আগামী বছরের মধ্যে সারকো ব্যবহারের উপযোগী হয়ে যাবে সুইৎজারল্যান্ডে। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে বহু অর্থব্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের আশা, আমরা প্রয়োগের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি’।

তবে যন্ত্র নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। অনেকে বলছেন যে, এই যন্ত্রটি আসলে গ্যাস চেম্বারকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেকের মতে, এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যাকে সব ক্ষেত্রে মান্যতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত দু’টি এমন সারকো যন্ত্র তৈরি হয়ে রয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখে আরও একটি যন্ত্রের থ্রি-ডি প্রিন্টিং শুরু করেছে এগজিট ইন্টারন্যাশনাল। আগামী বছর থেকে সুইজারল্যান্ডে এই পরিষেবা দেওয়া শুরু করাই লক্ষ্য সংস্থার। যদিও তাতে বিতর্কের ঢেউ থামছে না।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: