রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এক হাত নিলেন জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: অক্সিজেনের অভাবে সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় রোগী মারা যাওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার মন্ত্রণালয়ের তীব্র সমালোচনা করে জাতীয় সংসদে বক্তব্য রেখেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।

শনিবার (৩ জুলাই) স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ সমালোচনা করেন তারা। এ সময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অধিবেশন কক্ষে দেখা যায়নি।

বিরোধীদলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, ‘এক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে অবস্থা ছিল এখনো সেই অবস্থায় আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। যদি উন্নতি হতো তাহলে আজ এত মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ত না।’

তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ভারতের মতো ছড়ালে ও মৃত্যুর হার একই কারণে হলে বাংলাদেশ মহামারিতে ছারখার হয়ে যেতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে ভারতের চিকিৎসাব্যবস্থা আমাদের তুলনায় অনেক উন্নত। সেখানে করোনা যে বিভীষিকা তৈরি করেছে আশঙ্কা হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি এক বছর আগে থেকে কাজ শুরু করত তাহলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা সহজ হতো বলে মন্তব্য করেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘এখনো উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর সুবিধা পৌঁছায়নি। নেয়া হয়নি পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য কর্মচারী। ফলে জেলা-উপজেলার হাসপাতালে কোভিডসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা। অ্যানেসথেসিয়ার ডাক্তার থাকলে অপারেশনে করার ডাক্তার থাকে না। নষ্ট এক্স-রে মেশিন এ অবস্থা।’

দুই বছর আগে বাজেট অধিবেশনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সমস্যার কথা তুলে ধরলেও স্বাস্থ্য অধিদফতর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন জিএম কাদের। দুবার ডিও লেটার পাঠানো হলেও হাসপাতালের শূন্যপদ পূরণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ফোন দেয়া হলে তিনি ধরেন না বলে জানান জিএম কাদের।

তিনি বলেন, ‘লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে দেড় থেকে দুইগুণ রোগী সব সময় থাকে। ডাক্তারের মঞ্জুরিকৃত পদের সংখ্যা ৩৯টি। এখন আছে মাত্র ১৬ জন। ২৩টি পদই শূন্য। লালমনিরহাট সদরে একটি মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল আছে। সেখানে অপারেশনের ডাক্তার থাকলে অ্যানেসথেসিয়ার ডাক্তার থাকে না। আবার অ্যানেসথেসিয়ার ডাক্তার থাকলে অপারেশন করার ডাক্তার থাকে না। এ ধরনের সমস্যার কারণে সুযোগ-সুবিধাগুলো কোনো কাজে আসছে না।’

রংপুর হাসপাতালের অবস্থা তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, ‘রংপুর হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনের পানি বিশুদ্ধকরণ অংশটি নষ্ট ছিল দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস। ফলে ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছিল। এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় ৬ লাখ টাকা দান উঠিয়ে এটা মেরামত করা হয়েছে। এখন ২৫টির মধ্যে ১০টি কাজ করছে না। বারবার মন্ত্রণালয়ে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করা হয়েছিল। মেশিনটি ২০১৭ সালে মেসার্স বেঙ্গল সাইন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কো. সরবরাহ করে। কিন্তু মাত্র ২০ দিন কাজ করার পর মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে গত বছরের জুনে সংসদে বলেছি। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় বলেছি, কিন্তু মেশিনটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।’



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: