শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

রাফায়েল দুর্নীতিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তে ফ্রান্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ভারতের সঙ্গে রাফায়েল যুদ্ধবিমান চুক্তি ঘিরে নতুন করে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্স। একই সঙ্গে একজন বিচারকও নিয়োগ দিয়েছে দেশটি। শুক্রবার (২ জুলাই) এমনটা জানিয়েছে ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগ (পিএনএফ)।

সম্প্রতি রাফায়েল নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের বিরুদ্ধে চুক্তির মধ্যস্থতাকারীকে ১০ লাখ ইউরো উপহার দেয়ার অভিযোগ ওঠে। ফ্রান্সের একটি সংবাদমাধ্যমও অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে। টাকা উপহার দেয়া হয়েছে প্রমাণ স্বরূপ নথিপত্রও উপস্থাপন করে তারা।

ফ্রান্সের একটি দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনের পক্ষ থেকে রাফায়েল দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানানো হয়। পরে তার পক্ষে সম্মত হয় ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগ (পিএনএফ)। তার ভিত্তিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফরাসী সরকার।

এর আগে ২০১৮ সালে রাফায়েল চুক্তি নিয়ে তদন্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছিল পিএনএফ। সে সময় তথ্যপ্রমাণের অভাব অজুহাত দেখিয়ে দাবি খারিজ করা হয়েছিল। এবার ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে ২০১৬ সালে ভারত-ফ্রান্সের মধ্যে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল ভারত। সে সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফ্রাঁসোয়া ওঁলা। একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি, এর কিছুদিন পরেই ফরাসী দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তে মধ্যস্থতাকারীকে দেয়া উপহার সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ মিলেছিল।

তদন্তকারীদের সে সময় দাসো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, উপহার হিসেবে রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ৫০টি রেপ্লিকা (ছোট প্রতিরূপ) তৈরির জন্য ৫ লাখ ইউরো খরচ হয়েছে। প্রতি রেপ্লিকার জন্য ২০ হাজার ইউরো। কিন্তু রেপ্লিকা তৈরি ও বিতরণের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি যুদ্ধবিমান নির্মাতা সংস্থাটি। বরং তদন্তে জানা যায়, প্রায় ১০ লাখ ইউরো হিসাববহির্ভূত খরচ হয়েছে চুক্তিপর্বে।

ঘটনাচক্রে গত সেপ্টেম্বরে রাফায়েল চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারতের নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ- সিএজি-ও। সংসদে পেশ করা সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের সাথে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন এবং এমবিডিএ’র আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-কে সাহায্য করার কথা। কিন্তু তারা সেটা করছে না। অথচ ২০১৬ সালের রাফায়েল কেনার চুক্তিতে বলা ছিল, দাসো চুক্তি-মূল্যের ৫০ শতাংশ প্রকল্প বা কাজের বরাত ভারতের কোনো সংস্থাকে দেবে এবং প্রযুক্তিগত সাহায্য করবে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: