রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ কখনো শোধ হবে না

বিশেষ সংবাদদাতা:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ আমরা কোনো দিন শোধ করতে পারব না, তবে স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে অপরের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। জাতীয় শোককে শক্তিতে পরিণত করে নিজ নিজ কর্মস্থলে বেশি কাজ করার মাধ্যমে মানুষকে আরও বেশি সেবা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি কুচক্রী মহলসহ দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিষয়ে আমাদেরকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয়ে জনগণকে আরও সচেতন করতে হবে ও বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে বিএসএমএমইউ’র বি-ব্লকে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে উপাচার্য এ কথা বলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বি-ব্লকের সামনে গোলচত্বরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করা হয় এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় শোক দিবসে সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করেন। সকাল ৯টায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। মোট চার হাজার ৫১ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মেডিসিন অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে দুই হাজার ৫০৮ জন, সার্জারি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে এক হাজার ২৫০ জন, ডেন্টাল অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে ৮৬ জন ও ফিভার ক্লিনিকে ২০৭ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। এছাড়াও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেবাও বিনামূল্যে দেয়া হয়।

পরে সকাল সাড়ে ৯টায় শহীদ ডা. মিল্টন হলের সামনে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য। বেলা সাড়ে ১০টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও ১১টায় বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্যের স্মৃতির প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয় ও বাদ ফজর থেকে জোহর পর্যন্ত কোরআন খতমের ব্যবস্থা করা হয়।

এসব কর্মসূচিতে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়াদার টিটো, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ কুমার কুন্ডু, সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. নাজমুল করিম মানিক, উপপরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. খোরশেদ আলম, উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রসুল আমিন শিপন, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. শেখ সাইফুল ইসলাম শাহীন, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমুখসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় শোক দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল (ইনডোর), ফিভার ক্লিনিক, পিসিআর ল্যাব ও জরুরি বিভাগ প্রচলিত নিয়মে খোলা ছিল। এছাড়াও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা কনভেনশন সেন্টারে স্থাপিত ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রমও যথারীতি চলছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, অফিস ও বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস বন্ধ ছিল।



Comments are Closed

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: